বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিডের বায়ু মন্ডলে প্রথম জলীয় বাষ্পের সন্ধান পেয়েছে হ্যাবল টেলিস্কোপ সাহায্যে। বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিডে দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্যের সৃষ্টি হয়। দুপুর বেলাতে প্রবলভাবে উষ্ণ হয়ে ওঠে গ্যানিমিডের বায়ুমন্ডল আর রাতের দিকে হয় ঠিক উল্টোটা।
বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিড আমাদের সৌরমন্ডলের সবচেয়ে বড় চাঁদ। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ এমনটা বিশ্বাস করেন যে পৃথিবীর সকল সাগর-মহাসাগর মিলিয়ে যে পরিমাণে পানি রয়েছে গ্যানিমিডে তার থেকেও অধিক পরিমাণে পানি রয়েছে। তবে তরল অবস্থায় সেখানে পানির সন্ধান পাওয়া খুবই মুশকিল কারণ গ্যানিমিডের তাপমাত্রা এতটাই কম যার কারণে সমস্ত পানি জমে বরফে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির রিপোর্ট মতে গ্যানিমিডের পৃষ্ঠদেশ থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার গভীরে রয়েছে এই চাঁদের সমুদ্র।
কিছুদিন আগে বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্কষণ করার সময় গ্যানিমিডে বাষ্পাকারে পানির সন্ধান পায়। বিগত ২ দশক ধরে হ্যাবল টেলিস্কোপের আরকাইভাল ডেটাবেজকে খুটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন এ্স্ট্রনমাররা আর সেই পর্যবেক্ষণ থেকেই এটা জানা গিয়েছে যে বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিডের বায়ুমন্ডলে বাষ্পাকারে পানি উপস্থিত রয়েছে। ১৯৯৮ সালে হ্যাবল স্পেস টেলিস্কোপ প্রথম বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিডের একটি আল্ট্রাভায়োলেট ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে গ্যানিমিডের বায়ুমন্ডলে এক ধরণের অদ্ভুত জিনিস এর নির্গমন হচ্ছে আর তার একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন রয়েছে। এই ধরণের বৈশিষ্ট্য পৃথিবী সহ অন্যান্য অনেক গ্রহে দেখা যায়।
এরপর আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন বিজ্ঞানীরা এবং জানতে পারেন বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিডে দিন রাতের তাপমাত্রার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য হয়ে থাকে। দুপুরবেলা প্রবলভাবে উষ্ণ হয়ে ওঠে গ্যানিমিডের বায়ুমন্ডল । রাতে ঠিক তার উল্টো হয়ে যায় তাপমাত্রা এতটাই নেমে যায় যে গ্যানিমিডের বায়ুমন্ডল হিমশিতল হয়ে ওঠে। এই দিন এবং রাতের পার্থক্যের কারণেই জলীয় বাষ্পের তৈরি হচ্ছে গ্যানিমিডে। দিনের বেলা যখন তাপমাত্রা বেড়ে যায় তখন কিছু বরফ জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। যেহেতু ক্রাস্ট বা গ্যানিমিডের পৃষ্ঠের নিচে সমুদ্র রয়েছে তাই জলীয় বাষ্পের উৎপত্তি হয়।