বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক। এই মাদকের কারণে দিন দিন অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এছাড়া মাদক মানব শরীরের জন্য ভয়ঙ্কর এবং বিপদজনক একটি পদার্থ। সাম্প্রতিক সময়ে এলএসডির মতো নানান ধরনের নতুন নতুন মাদকের প্রকাশ ঘটছে। আমরা যদি এখনই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এসব মাদক থেকে দুরে রাখতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতে এটি আরো ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যুর পর চিহ্নিত করা হয় এলএসডি মাদক। এই এলএসডি মাদক চিহ্নিতকরণের ১ মাস পার হতে না হতেই দেশে আরেকটি নতুন ধরণের মাদকের খোজ পাওয়া গেলো যার নাম হলো “ডিএমটি”।
ডিএমটি এটি হলো হ্যালুসিনেশন টিপট্যামিন টার্ক। ডিএমটি মাদক সেবন করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেবনকারীর মধ্যে হ্যালুসিনেশন কাজ করে। কোনো কোনো দেশে এই মাদকটি ট্রিপ হিসেবে পরিচিত। ৬০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এই মাদকটি বিজনেস ট্রিপ হিসেবে পরিচিত ছিলো। সর্বপ্রথম ১৯১৫ সালে জার্মানির রসায়নবিদ চার্ট হ্যান্ড ফ্রেডরিক বিভিন্ন ধরনের প্রকৃতিক উদ্ভিদ থেকে ডিএমটি মাদক আবিষ্কার করেন। কয়েক দশক ধরে দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ডিএমটি মাদকটি সেবন করে আসচ্ছিলো। যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্যের মতো বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোতে ডিএমটি মাদক অবৈধ্য এবং বিপদজনক মাদক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সাধারণত ডিএমটি মাদক সেবন করলে হ্যালুসিনেশন কাজ করে। তবে ডিএমটি মাদকে সেবনের সময় ধুমপান করলে হ্যালুসিনেশনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ডিএমটি মাদক সেবনে ব্যক্তির মধ্যে ব্যতিক্রমী এক অনুভূতি সৃষ্টি হয়ে বাস্তবতাকে কাল্পনিক জগত হিসেবে ভাবতে শুরু করে।
একটি জরিপে দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালের তরুন ছাত্র নেতারা ডিএমটি মাদক খুব বেশি সেবন করে থাকে। ডিএমটি মাদক সেবনের ফলে সেবনকারীর মনে করে তার ভেতরে প্রচুর শক্তি সঞ্চয় হয়েছে। এই মাদকটি অতিমাত্রায় সেবন করলে সেবনকারী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং দিনে দিনে পরিবার ও আত্বীয়স্বজন থেকে একাকীত্ব থাকতে পছন্দ করবে। এছাড়া এই মাদক সেবনে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি, মাথা ব্যাথা, বুকে ব্যাথা, এবং বুক শক্ত হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাবসহ নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিএমটি মাদক সেবনে ধর্ষণ এবং হত্যাকান্ডের মতো অপরাধও সংঘটিত হয়।
এখন আমরা যদি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই মাদক থেকে দুরে রাখতে না পারি তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই আমাদের এখনই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।