এ বছরের প্রথম সুপারমুন দেখা গেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্কো, লাতিন আমেরিকার দেশগুলো সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
এখন প্রশ্ন হলো সুপারমুন কি? পৃথিবী থেকে সাধারণ দূরত্বের তুলনায় এবার আরো কাছে এসেছে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ চাঁদের উজ্জলতা যেমন বেশি, ঠিক তেমনই এর আকৃতিতেও বড় পরিবর্তন দেখা যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যাকে বলে থাকেন সুপারমুন বা ব্লুমুন। সুপারমুন এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ‘পেরিগি মুন’। পেরিগি অর্থ হচ্ছে পৃথিবীর নিকটতম। সুপারমুনের কোন প্রচলিত বাংলা নেই। এটাকে অনেকে ‘অতিকায় চাঁদ’ বলে থাকেন।
পৃথিবী-চন্দ্র-সূর্য সিস্টেমে অতিকায় চাঁদের টেকনিক্যাল নাম হচ্ছে ‘perigee-syzygy’। সুপারমুনের বিপরীত দশা মাইক্রোমুন। যার টেকনিক্যাল নাম হচ্ছে ‘apogee-syzygy’। সুপারমুন স্বাভাবিকের তুলনায় বড় চাঁদ। নাসা এক বিবৃতিতে জানায় কক্ষপথে প্রদক্ষিন করতে করতে একসময় পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসে চাঁদ। ওই সময় পৃথিবীর দ্রাঘিমা অনুযায়ী চাঁদ ও পৃথিবী থাকে একে অপরের ঠিক উল্টোদিকে। তখন খালি চোখে চাঁদকে দেখে অনেক বড় মনে হয়।
সুপারমুনের রাতে জ্যোছনায় পৃথিবী প্লাবিত হয়। এ বছর প্রথম সুপারমুন দেখা যায় সোমবার ২৬ এপ্রিল ২০২১ এবং পরবর্তী সুপারমুন দেখা যাবে ২৬ মে ২০২১। অনেক বিজ্ঞানীই জানান স্বাভাবিকের তুলনায় সুপারমুন এর আকৃতি বেড়ে যায় ১৪ শতাংশ এবং উজ্জ্বলতা বেড়ে যায় ৩৩ শতাংশ। ২০২১ সালে সোমবার আর্জেন্টিনায় এবং ভেনেজুয়েলার বিভিন্ন শহর থেকে প্রথম সুপারমুন দেখা গেছে। সুপারমুন দেখা গেছে দিল্লির আকাশেও। ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে স্পষ্ট ভাবে দেখা গেছে সুপারমুন। করোনা পরিস্থিতির মাঝেই নতুন আশার বার্তা জানান দেবে এমনটাই প্রত্যাশা সেখানকার স্থানীয়দের। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বনদি সমুদ্র সৈকত থেকেও বড় চাঁদ দেখা উপভোগ করেন সেখানে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। এছাড়াও তুরস্কের আকাশে জ্বল জ্বল করছিল সুপারমুন। জার্মানির ড্রেসডেন এবং ফ্রাঙ্কফুটেও সুপারমুন দেখা গেছে কিন্তু করনার কারণে মানুষ জড়ো হতে দেখা যায় নি।
১৯৭৯ সালে এমন বড় আকারের চাঁদের নাম দেওয়া হয় সুপারমুন। এবছর পিঙ্ক সুপারমুন নাম দেওয়া হয়েছে। নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছেন এ বছর মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে চারটি সুপারমুন দেখা যাবে। সুপারমুনের কারণে পৃথিবীতে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।