সন্তানকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখার কার্যকরি উপায়

লাইফস্টাইল

প্রত্যেকের সন্তান প্রত্যেকের কাছে খুবই আদরের পাত্র। তবে সন্তানকে সু নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে আপনার সন্তান আপনার জন্যই অভিশাপ হয়ে যেতে পারে। আমাদের সন্তানের সাফল্যের পেছনে যেমন আমাদের অবদান রয়েছে, তেমনি সন্তানের অধঃপতনের পেছনেও আমরাই দায়ী। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, অল্প বয়সে শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া তাদের অধঃপতনের অন্যতম কারণ। তাই সন্তানদের হাতে অল্প বয়সেই মোবাইল ফোন তুলে দিবেন না। এতে আপনার সন্তান সু নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।

আজ আমরা জানবো যে কাজগুলো আপনার সন্তানকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

১। ঘরের আসবাবপত্রের সঠিক অবস্থানঃ
ঘরের আসবাবপত্রের সঠিক অবস্থান পয়েন্টটি পড়ে আপনার মনে হয়ত প্রশ্ন জাগছে শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের পেছনে এর ভূমিকা কি? শিশুরা সাধারণত বাসার যে জায়গায় বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করে সেখানে কোন ইলেকট্রিক ডিভাইস না রাখায় ভাল। এতে আপনার সন্তানের মোবাইল ব্যবহারের কথা মনে থাকবে না। বরং সেই রুমে বুক সেলফ রাখতে পারেন। এতে এমন ধরনের বই রাখুন যা দেখে তাদের বই পড়ার ইচ্ছা জাগে। ছবি আঁকা, রং করার নানা উপকরণ এবং বোর্ড সেট করে রাখুন। এতে তাদের মনে নতুন কিছু ধারণা আসলেই সেই বিষয় নিয়ে সে ছবি আঁকতে পারবে। রুমের চারিদিকে নানা ধরণের আকর্ষনীয় ছবি, বিখ্যাত ব্যক্তিদের উক্তি ইত্যাদি দিয়ে সাজাতে পারেন। এতে আপনার সন্তান এই সমস্ত বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকবে এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

২। শিশুদের একাকিত্ব দূর করাঃ
শিশুরা সব সময় চাই কেউ একজন তার সাথে খেলা করুক বা গল্প করুক। এতে তার মানসিক বিকাশ বৃদ্ধি ঘটে। আর যখনি একা একা থাকে, তখনি মোবাইল ফোনে গেম খেলা, ভিডিও দেখার ইচ্ছে জাগে। তাই চেষ্টা করবেন শিশুদের পাশে সর্বদা কেউ না কেউ একজন থাকা এবং তার সাথে মজা করা। ফলে শিশুটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করা কমিয়ে দিবে।

৩। বড়দের মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক হওয়াঃ
আমাদের একটি খারাপ অভ্যাস হচ্ছে শিশুদের কাছে বসে নানা ধরণের ভিডিও দেখা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দেখেছেন সেই দেখেছেন বলে তাদের সামনে গল্প করা। আপনার এমন কথাবার্তা এবং ভিডিও দেখার কারণে আপনার শিশু মোবাইল ফোনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পরবে। তাই তাদের সামনে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং তাদের সামনে অনলাইনের এমন কোন বিষয় নিয়ে গল্প না করা যা তাদের ওই বিষয়গুলো মোবাইলে দেখতে উৎসাহিত করে। এছাড়া আপনার ব্যবহৃত ফোনটি এমন কোথাও রাখবেন না যেন আপনার অনুপস্থিতিতে শিশুরা সেটি ব্যবহার করতে পারে।

৪। ক্রিয়েটিভ জিনিস তৈরিতে উৎসাহ প্রদানঃ
শিশুদের নানা ধরণের ক্রিয়েটিভ জিনিস তৈরি করতে শেখান। এতে তাদের মেধার বিকাশ ঘটবে। তাদেরকে শেখান কিভাবে অপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে নানা ধরণের প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করা যায়। এতে তারা পরিবেশের নানা বস্তুর পুনঃব্যবহার সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারবে এবং নিজে নিজে নানা কিছু তৈরি করতে উৎসাহিত হবে।

৫। কোন মোবাইল জাতীয় ডিভাইস উপহার না দেওয়াঃ
আপনার সন্তান কোন ভাল কাজ করলে তাকে উপহার হিসেবে মোবাইল ফোন বা এমন কোন ডিভাইস উপহার দিবেন না। বরং তাকে কোন বৈজ্ঞানিক বই, কোন জটিল গেমের সেট উপহার দিন। এতে তার চিন্তা ধারণার উন্নতি হবে।

৬। প্রকৃতিকে ভালবাসতে সেখানঃ
আমাদের চারপাশে নানা ধরণের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য রয়েছে। আপনার সন্তানকে প্রকৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতি কিভাবে আমাদের সাহায্য করছে সেই বিষয়ে তাদের ধারণা দিন। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে শিশুদের নিয়ে শহর থেকে একটু দূরে প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরে আসুন। এতে তারা পৃথিবীর নানা সৌন্দর্য্য দেখতে পারবে এবং আরো দেখার এবং জানার আগ্রহ বাড়বে।

যেহেতু এখন প্রযুক্তির যুগ, তাই প্রযুক্তির নানা সুবিধা পেতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনার সন্তানকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দিতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন যেন আপনার উপস্থিতিতেই সে মোবাইল ব্যবহার করে এবং কোন ভাবেই বেশি সময় ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।

এছাড়া আরো নানা ধরনের টিপস রয়েছে যা আপনার সন্তানকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। আপনি যদি আর কোন টিপস অন্যদের সাথে শেয়ার করতে চান, তবে কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত লিখুন। তাহলে অন্যরা আপনার টিপসটি জেনে উপকৃত হবে।

মন্তব্য করুন